নবীজি (স) এর ঈদ উদযাপন

এই ঈদে একটা গল্প মনে পরেছিলো তার প্রেক্ষিতে কিছু চিন্তা ভাবনা শেয়ার করার ইচ্ছা থেকেই আমার আজকের এই টপিক।

নবীজী (স) তখন মদিনার রাষ্ট্রপ্রধান। একবার ঈদের নামাজ শেষে তিনি ফিরছেন। একটা ছোট্ট বাচ্চাকে দেখলেন মাঠের এক কোণে বসে কাঁদছে। নবীজী (স) জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কাঁদছ কেন? ছেলেটি বলল, আমার বাবা মারা গেছেন। মায়ের আরেক জায়গায় বিয়ে হয়েছে, সেখানে আমার থাকার সুযোগ হয় নি।

নবীজী (স) বললেন, আমিও এতিম, আমারও বাবা ছিল না। তুমি আমার সাথে চলো। আয়েশা তোমার মা হবে আর ফাতেমা তোমার বোন হবে।

ছেলেটি তাকিয়ে যখন নবীজীকে (স) দেখল তখন তার কান্না বন্ধ হয়ে গেল। তিনি তাকে নিয়ে গেলেন। মা আয়েশাকে বললেন, একে গোসল করিয়ে জামাকাপড় দাও পরুক।নবীজী (স) তাকে নিজের বাড়িতেই লালন করতে লাগলেন।

গল্পটা স্কুলে ছোটবেলায় আমাদের পাঠ্যবইয়ে ছিল। আমরা অনেকেই পড়েছি। কিন্তু তখন ঘটনার ডাইমেনশনটা চিন্তা করতে পারি নাই। আপনি ভাবতে পারেন- একজন রাষ্ট্রপ্রধান, তার চোখ পড়ছে ঈদগাহের এককোনায় বসে থাকা একটি শিশুর দিকে! তিনি তো তাকে জাস্ট কিছু অর্থসাহায্য দিয়ে ছেড়ে দিতে পারতেন বা এট বেস্ট এতিমখানায় পাঠিয়ে দিতে পারতেন। আমাদের দেশে আছে না- সরকারি শিশু পরিবার!

তা তো তিনি করেন নি। বরং নিজের বাড়িতে নিজের স্ত্রী-কন্যার সঙ্গে পরিজনের সম্পর্কে তাকে সম্পৃক্ত করে দিলেন।

আজকে যখন ভাবি, শুধু বিস্মিত হই যে মানুষকে সম্মানিত করা, তার মানসিক প্রয়োজন পূরণের কত উচ্চতর মনস্তত্ত্ব নিয়ে তিনি ভেবেছেন। অরফানেজের শিশুদের নিয়ে অনেক গবেষণা আছে- খাওয়া, পরা, জীবন উপকরণ পেলেও পরিবারের মমতা, পরিজনের স্পর্শ না পাওয়া এই শিশুদের অনেকেই পরে মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী হয়েছে।

যাই হোক, এরকম এক মানবিক মহাসমাজেরই স্বপ্ন আমরা দেখি, যেখানে কোনো মানুষ ক্ষুধার্ত থাকবে না, কেউ মমতাহীনতায় থাকবে না, অন্যায়-জুলুমের শিকার হবে না।

2 Likes