শত শত মানুষের জবের প্যাটার্ন দেখে একটা জিনিস ক্লিয়ার যারা জব খুঁজতেসেন, তাদের একটা বিশাল অংশ নিজেকে ডেডিকেট করতেসেন না জব খুঁজার জন্য। জাস্ট জব খুঁজতে হবে, কাজ পেতে হবে, জীবন এগিয়ে নিতে হবে, এজন্যই জব খুঁজতেসেন। এদের বিশাল একটা অংশ হতাশাগ্রস্থ অবস্থায় নিজেদের সময় নষ্ট করে থাকেন।
দেখা যায় যাকে ছয় মাস আগেও বড় ভাইদের কমেন্ট বক্সে পেয়েছি জব পাওয়ার কিছু টিপসের জন্য, ছয় মাস পরেও একই মানুষকে কমেন্ট বক্সগুলোতে পেয়েছি জব পাওয়ার কিছু টিপস আর ট্রিকসের জন্য। ছয় মাস আগেও একই মানুষকে পেয়েছি জব এপ্লিকেশনে, ছয় মাস পরেও একই মানুষকে পেয়েছি জব এপ্লিকেশনে। মাসের পর মাস চেষ্টা করেই যাচ্ছেন, কিন্তু কোন পরিবর্তন নেই। এর রহস্য কি? কিভাবে পরিবর্তন আনা যায়?
প্রথমত বুঝতে হবে, টিপস, ট্রিকস এবং গাইডেন্স তখনই শুধু কাজে লাগে যখন আপনি নিজের ইফোর্ট দিবেন সেই টিপস, ট্রিক্স, গাইডেন্স কাজে লাগানোর জন্য। যদি আপনাকে সবসময় গাইড করা হয়, কিন্তু আপনি গাইড অনুযায়ী কাজ না করেন, তাহলে যিনি গাইড করতেসেন তার নিজেরও সময় নষ্ট, আপনারও সময় নষ্ট। এমনকি আপনিও এটা জানেন, আপনি নিজেও এটা অনেকবার প্রতিজ্ঞা করেছেন যে কাল থেকেই হয়তো চেন্জ হয়ে যাবেন, কিন্তু দুইদিন পর আপনার মোটিভেশন আবার হারিয়ে যায় কোন এক পরিস্থিতির অজুহাতে।
শুরুটা করতে হবে আপনার বেসিক জ্ঞান দিয়ে। আপনি আসলে কি পারেন, এবং কি পারেন না তা ভালোমত খুঁতিয়ে দেখতে হবে। যদি মনে হয় আপনি সিএসএস পারেন, তাহলে গুগল করা ছাড়া দুইটা কুইজে অংশ নিয়ে দেখেন রেজাল্ট কি আসে। যদি মনে হয় জাভাস্ক্রিপ্ট পারেন, তাহলে গুগল আর জিপিটির সাহায্য ছাড়া নিজেকে প্রশ্ন করে দেখেন। ইন্টারভিউ বোর্ডে আপনাকে বেসিক কিছু জিজ্ঞাসা করলে গুগলও করতে দিবে না, জিপিটিও ব্যবহার করতে দিবে না, হাতে থাকবে মাত্র কয়েক মিনিট সময়।
এরপর আপনার গিটহাব দিয়েই শুরু করেন। একজন ডেভেলপার হিসাবে একটা সাজানো গুছানো, মিনিমাল গিটহাব আপনার প্রফেশনাল ক্যারিয়ারে বিশাল অবদান রাখতে পারে। শুধু ফ্যান্সি কিছু ডিজাইন অনলাইন থেকে বসিয়ে দিলেই হবে না। সময় নিয়ে সত্যিকার অর্থে আপনার গিটহাব সাজিয়ে নিন। রিপোজিটোরি না থাকুক, পপুলারিটি না থাকুক, গিটহাবে ঢুকলে যেন আপনার একটা সিভি ছাড়াই সিভি পাওয়া যায়, আপনার সম্পর্কে পরিস্কার একটা ধারণা হয়ে যায়।
আপনার ফেসবুক একাউন্ট খুব পার্সোনাল একটা বিষয়। কিন্তু আপনার কানেকশনের বেশিরভাগ মানুষই হয়তো ফেসবুক থেকেই পেয়েছেন। আপনার বড় ভাই, ছোট ভাই, কমিউনিটির সিনিয়র, জুনিয়র এদের বিশাল একটা অংশ আপনাকে ফেসবুক থেকেই চিনে। আপনার ফেসবুকটাকে একটু ডেভেলপমেন্ট ফ্রেন্ডলি একটা ভাব দিতে পারেন। ডেভেলপার ফ্রেন্ডলি কমিউনিটিতে এই একাউন্ট দিয়ে নেটওয়ার্কিং করা শুরু করতে পারেন। মানুষকে হেল্প করা শুরু করতে পারেন, মানুষের সমস্যা সমাধান করা শুরু করতে পারেন।
লিংকেডইন নিয়ে আমরা অতটা সিরিয়াস না। কিন্তু একটু সাজানো গুছানো লিংকেডইন আপনার প্রফেশনালিজমের একটা পরিচয় দিতে পারে। সময় নিয়ে প্রতিটি প্রজেক্টের বিস্তারিত সেখানে শেয়ার করুন। প্রজেক্টের ডিটেইলসে প্রজেক্টটা কি, কিভাবে, ইত্যাদির সাথে এই প্রজেক্টে আপনার মূল ভূমিকা কি ছিল, কি কি বিশাল পরিবর্তন করতে পেরেছেন, সেগুলা নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। এমনভাবে জিনিসটা সাজাবেন, যেন লিংকেডইন থেকেই সরাসরি আপনার রেজুমে প্রিন্ট করে ফেলা যায়, বা জবে এপ্লাই করা যায়। শুধু শুধু ফ্যান্সি কথাবার্তা চ্যাটজিপিটি থেকে কপি করলেই হবে না, সময় দিন।
নিজের পোর্টফোলিও সাইট অনেকেই বানান। কিন্তু সেখানে দায়সাড়া কাজকর্ম করে রাখেন। দেখা যায় পেইজ লোড হতেই সারাদিন লাগে, বা হয়তো গত দুই বছরেও সাইট আপডেট করেননি। অথচ আপনার রিক্রুটারকে লিংক ধরিয়ে দিয়েছেন, এই আশায় যে হয়তো এতেই হয়ে যাবে। কিন্তু এতে লাভের তুলনায় লস বেশি হয়। একটা বাজে পোর্টফোলিও সাইট আপনার পুরো সাবমিশনকে নষ্ট করে দিতে পারে। তাই পোর্টফোলিওর স্পিড, ডিজাইন, কনটেন্ট, ইমেইজ ও লিংকের ওরিয়েন্টেশন, প্রজেক্টগুলোতে আপনার কঠোরতা, কোমলতা, প্রফেশনালিজম, বিষয়গুলো দুইবার করে চেক করে নিবেন। সাবমিশনের পর এক্সপ্লেইন করতে চেষ্টা করে লাভ নাই।
প্রবলেম সল্ভিং সাইটগুলোতে নিজেকে পরিচিত করে নিন। গুগলের সরাসরি সাহায্য না নিয়ে প্রতিদিন একটা বা দুইটা করে প্রবলেম সলভ করুন, এগুলার বিস্তারিত দেখুন, শুধু সলভ করলেই হবে না, কিভাবে সলভ করেছেন, আরো ভালোভাবে সলভ করা যেত কিনা, এগুলোও পড়াশোনা করুন। এমনভাবে প্রাকটিস করুন যেন ইন্টারভিউ বোর্ডে আপনাকে কোন একটা প্রবলেম দিলে আপনি খাতা কলম দিয়েই সেটা সলুশন করে ফেলতে পারেন। বেসিক শক্ত করতে পড়তে পারেন কম্পিউটার সায়েন্স ডিসটিলড, বা গ্রোকিংস এলগোরিদম, বা অন্যান্য শত শত বই অথবা কোর্স, যেটা আপনার ভালো লাগে। সময় দিন, হেলাফেলা করবেন না, গুগল থেকে কপি পেস্ট করবেন না, একটা প্রবলেম সলভ করলে একটাতেই সময় দিয়ে সলভ করুন।
যদি কোথাও কোন রকম ভিডিও দেখেন বা কোর্স করে থাকেন, সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন কোর্স থেকে যা শিখেছেন সেগুলো কাজে লাগিয়ে নিজে কিছু করার। ধরেন একটা পোর্টফোলিও সাইট তৈরি করার ভিডিও দেখেছেন, আপনি হুবহু সেটা বানিয়ে ফেললে বিষয়টা অতটা সুন্দর হবে না, নিজের জ্ঞান কাজে লাগিয়ে সেখানে মনের মাধুরি মিশিয়ে আপনার ইউনিকনেস বোঝানো উচিৎ। অনেকে আবার এক ধাপ এগিয়ে কোন জবে পাওয়া টাস্ক করে, নিজের পোর্টফোলিওতে এড করে ফেলে, যাতে করে তার গ্রহনযোগ্যতা বাড়ার পরিবর্তে আরো এক ধাপ কমে যায়।
অনেকে সিভি বা পোর্টফোলিওতে উল্লেখ করে তারা ৮০% রিএক্ট শিখে ফেলেছে, ৯০% পিএইচপি, বা এভাবে একটা নাম্বারিং করে ফেলে। কিন্তু কোন একটা টেকনোলোজির উপর নাম্বারিং করা সঠিক কাজ নয়, বিশেষ করে বিগিনার হিসাবে এরকম সিভির টেমপ্লেট ফলো করাই উচিৎ নয়। আপনাকে যদি পিএইচপির বিশাল ৯০% থেকে একটা প্রশ্ন করা হয়, আপনার কি মনে হয় আপনি উত্তর দিতে পারবেন? সিভিতে এমন কিছু এড করা উচিৎ না যেটা আপনি একটুও পারেন না। আবার যা এড করবেন সেই রিলেটেড কাজগুলোর একটা হিন্টস এড করতে হবে। যেন আপনি যে আসলেই পারেন সেটা বুঝা যায়।
অনেকেই প্রোগ্রামিং প্রবলেম দেয়ার পর সেটা সঠিকভাবে পড়েও দেখেন না। দেখা যায় ফাংশন লিখতে বলা হয়েছে, আপনি ফাংশন ছাড়াই কোড সাবমিট করে ফেলেছেন। ভেবেছেন এটা ত কাছাকাছি উত্তরই দিবে। কিন্তু দায়সাড়া ভাবে আপনি উত্তর দিলে, আপনার জব পাওয়ার সম্ভাবনাও দায়সাড়া হয়ে যাবে। যেকোন একটা প্রবলেম পেলে সেটাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সমাধান করতে হবে। যথাসম্ভব গুগল, ফেসবুকের সাহায্য না নিয়ে করতে হবে যেন প্রোগ্রামিং প্রবলেম রিলেটেড যেকোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলে উত্তর দিতে পারেন। এই স্টেজে চিটিং করলে নিজেই পরের স্টেজে ধরা খাবেন।
প্রোগ্রামিং রিলেটেড এসাইনমেন্ট দেয়া হলেও অনেকে দায়সাড়া ভাবে সেটা করে জমা দেন। আপনার মত আরো কয়েকশ মানুষ সেইম জবে এপ্লাই করে, সেইম টাস্ক করতেসে। আপনার কি মনে হয় রিক্টুটারের সময় আছে প্রতিটা এসাইনমেন্ট খুঁতিয়ে দেখে আপনাকে ফিডব্যাক দিতে দিতে সেটা ফিক্স করিয়ে নিবে? আপনার উচিৎ প্রথমবারই এই পরিমাণ এফোর্ট দেয়া যেন আপনার উপর রিক্রুটার একদম সন্তুষ্ট হয়ে যায়। প্রয়োজনে রিকোয়ারমেন্ট দশবার মিলিয়ে নিবেন, টেস্ট এড করবেন, নিজে হাতে করে রিডমি লিখবেন, সময় দিতে থাকবেন। লিংক সঠিক আছে কিনা মিলিয়ে নিবেন, আরো সুন্দর করা যায় কিনা দেখবেন। প্রতিটি এসাইনমেন্টকে একটা লার্নিং এক্সপেরিয়েন্স হিসাবে নিবেন। আপনার কনফিডেন্সের অভাব বুঝতে দিবেন না। প্রচুর পরিশ্রম করে হলেও এটা সলভ করবেন।
সিভি, রেজুমে এগুলো আসলে এখন বেশিরভাগ অটোমেটিক রিজেক্ট করা হয়। অনেক সময় কভার লেটার, জব পোস্ট বা অন্যান্য জায়গায় সিক্রেট কিছু শব্দ এড করে দেয়া হয়, অথবা নির্দিষ্ট ফরমেটে নির্দিষ্ট ডকুমেন্ট সাবমিট করতে বলা হয়। কিন্তু যারা সাবমিট করে, তাদের বেশিরভাগই এই এটিএস এর কাছে রিজেক্টেড হয়ে যায় শুধু সঠিক ফরমেটে সাবমিট না করার কারণে। অনেকে এমন সিধাসাধা ফাইল সাবমিট করে, যেটায় কোন প্রজেক্টের ডিটেইলস নাই, আবার অনেকে কপি পেস্ট সিভি সাবমিট করে যেখানে নিজের বিন্দুমাত্র এফোর্ট দেখা যায় না। ইন্টারনেটে থাকা শত শত অটোমেটিক সিভি চেকিং টুলসগুলো দিয়ে নিজের সিভিটা সময়মত জাজ করে নিতে পারলেও এখানে একটা বিশাল পরিবর্তন করা সম্ভব। যেখানে এপ্লাই করবেন, যথাসম্ভব চেষ্টা করবেন তাদের রিকোয়ারমেন্টের সাথে আপনার সিভি যেন মিলে, প্রয়োজনমত পরিবর্তন করে নিবেন প্রতিবার।
কমিউনিকেশন গুরুত্বপূর্ণ, এবং তার সাথে এটিচিউড আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি ভাবেন সিভি সাবমিট করে, বা প্রজেক্ট সাবমিট করে আপনি সাথে সাথে রিপ্লাই পাবেন, তাহলে বিষয়টা অসম্ভব। একই সাথে আপনাকে প্রতিটি কোম্পানীতে এপ্লাই করার আগেই কোম্পানীর কোন কর্তাব্যক্তির সাথে, কোম্পানীর কমিউনিটির সাথে ভাব জমাতে হবে, সেখানে নিজের স্কিল জাহির করতে হবে। একটু সময় নিয়ে হলেও তাদের মন জয় করে ফেলতে হবে। অনেক ক্ষেত্রেই সামাজিক মাধ্যমে নিজেকে ভুলভাবে তুলে ধরার কারণে, বা বড় ভাইদের সাথে বাজে আচরনের কারনে নিজের ক্যারিয়ার তুলোধুনা হয়ে যায়। দেখা যায় ফ্রেশার হয়ে আপনি বড় ভাইদের সাথে ছোটখাট বিষয়ে ক্যাচাল লাগিয়ে দিলেন, যে কিনা আপনার সিভি হ্যান্ডেল করতেসে অন্য একটা কোম্পানীতে, এতে আপনারই লস। আপনাকে এইসব ক্ষেত্রে খুবই হাম্বল এবং ধৈর্যশীল হতে হবে।
ক্যারিয়ারের বেলায় ইন্ট্রোভার্ট থেকে অন্যান্য বিষয়ে এক্সট্রোভার্ট হয়ে লাভ নাই, আপনার ক্যারিয়ার এগিয়ে নিতে আপনাকেই এগিয়ে যেতে হবে। প্রয়োজনে সব বিষয়ে ইন্ট্রোভার্ট হয়ে নিজের প্রফেশনাল দিকে এক্সট্রোভার্ট হয়ে যাবেন। ফানি মিমস, এডাল্ট রিলস, ফাউল ভিডিও দেখে নিজের সময় আর মানসিকতা নষ্ট না করে সেটা সঠিক জায়গায় কাজে লাগাবেন। একটা ভালো পর্যায়ে চলে যাবার পর নিজের প্রোফাইলে আপনি কবিতা লিখলেও সেটা অতটা ইমপ্যাক্ট করবে না, তখন বরং আপনার ফানি কথাবার্তাও অনেকের কাছে মাধুর্যপূর্ণ ও সফল হবার চাবিকাঠি হিসাবে কাজ করবে।
সর্বশেষ হলো স্যালারি নেগোশিয়েশন। আপনার উপরের সবকিছুই যদি একদম সুন্দর হয়, এরপর আপনি স্যালারি নিয়ে চিন্তা করতে পারেন। অনেকেই নূন্যতম বেসিক ঠিক না রেখেই নিজেকে বিশাল কিছু ভেবে সিনিয়র ডেভেলপারের স্যালারি চেয়ে বসে থাকেন। একদিকে থাকে জব পোস্টগুলাতে নিজের ট্রল করার মানসিকতা, অন্যদিকে থাকে নরমাল পোস্টগুলোতে জব না পাওয়ার হাহাকার নিয়ে কথাবার্তা। হ্যা, অবশ্যই যারা স্ক্যামার আছে, বা জুলুমবাজ হিসাবে প্রমাণিত, সেগুলোর ব্যাপারে আপনি ওয়াকিবহল থাকা গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু নিজের ক্যারিয়ারকে আগে ফোকাস করে, এরপর আপনি স্ক্যামারদের বিরুদ্ধে একশন নিলে সেটা আরো বেশি কঠোরভাবে কাজে আসবে।
অতিরিক্ত কিছু পয়েন্টঃ
আজকাল সুন্দর পোশাকের গুরুত্ব অনেক বেশি। একটা ইন্টারভিউতে পরিপাটি থাকবেন, একটা মিটিংয়ে সময়মত জয়েন করবেন, একটা জব পাওয়ার জন্য ধৈর্যশীল হবেন, নূন্যতম ভদ্রতা মেইনটেইন করবেন, একটা ছবি তুললে লাইটিং ঠিক করে করবেন, একটা কলে জয়েন করার আগে ভালো একটা নীরব জায়গায় বসবেন, স্ট্যাবল ইন্টারনেটের ব্যবস্থা রাখবেন, সব জায়গায় ভালো একটা প্রফেশনাল ছবি দিবেন। এগুলো সবই পোশাকের অন্তর্ভুক্ত। পোশাক শুধু দামি পোশাকেই হয় না, ব্যাক্তির আচরণও এখন পোশাকের অংশ। বাজে ব্যক্তিত্বের মানুষে সুন্দর পোশাকেও বিশ্রি লাগে, ভালো ব্যক্তিত্বের মানুষ একটু মলিন ছেড়া পোশাকেও অসাধারণ লাগে।
সবার হয়তো এত দিকে নজর দেয়ার সিচুয়েশন নাই। কারো হয়তো জবটা এখনই দরকার, ফ্যামিলি ক্রাইসিস, হাতে সময় নাই, ভার্সিটি শেষ, পরিবারের বড় ছেলে, বা অন্য কিছু। কিন্তু আপনার মত আরো হাজার হাজার মানুষেরও হয়তো জবটা এখনই দরকার, তারাও আপনার মত হন্য হয়ে ক্যারিয়ার গড়তে চাচ্ছে। তাই আপনার নিজেকে এগিয়ে রাখার জন্য আপনি নিজে পরিশ্রম করতে হবে। ক্লান্ত দিন আর নির্ঘুম রাতের কঠোর পরিশ্রম আপনাকে একটা ভালো পজিশনে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
অনেকে ক্যারিয়ার শুরুর আগেই ভাবেন বড় কোম্পানীতে রিমোট জব করবেন, কিংবা নিজের স্টার্টআপ দিবেন। আপনার স্বপ্ন থাকা খারাপ না। কিন্তু বুঝতে হবে এই পথে কম্পিটিশন আরো বেশি, রাস্তা আরো বেশি কঠিন, আরো বেশি কঠোর, আরো বেশি পরিশ্রমের। আপনাকে আরো বেশি জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করেই কেবল এই পথে আসতে হবে। শূন্য হাতে শূন্য থেকে এই রাস্তাগুলোতে এগুলে শুধু শুধু নিজেরই ক্ষতি, হাত শুন্য না থাকলে ভিন্ন ব্যাপার।
আমি নিজেও আমার ক্যারিয়ার লাইফে অনেক ভুল করেছি, এবং ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়েছি। আপনিও একই মনোভাব রাখতে হবে, হাল ছেড়ে দেয়া যাবে না, ডিমোটিভেটেড হওয়া যাবে না। ভুল করবেন, এবং ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিবেন।
এই কয়েকটা বিষয় আপনি একটু খেয়াল রাখলেই আপনার ক্যারিয়ারের চেহারাই চেন্জ হয়ে যেতে পারে। আপনার জীবনে যত বাধাই থাকুক না কেন, চাকরিটা আপনার জন্য যত জরুরীই হউক না কেন, একটা সঠিক ইমপ্রেশন আপনার জীবন বদলে দিতে পারে।
আর আপনার ইমপ্রেশন আপনি ছাড়া আসলে কেউ পরিবর্তন করবেও না, আফটার অল, আপনার ফেসবুকে ত আর আমি গিয়ে পোস্ট করি না, বা আপনার লিংকেডইনের একসেসও আমার কাছে নেই, আপনার সিভিটাও আমি সাবমিট করি না। আপনার জীবন গড়তে কষ্টটা আপনাকেই করতে হবে।