Laravel ছেড়ে Django ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত কেন নিলাম (ব্যক্তিগত মতামত)

আমি Laravel framework এর সাথে কাজ করেছি দীর্ঘদিন এবং এটি আমার প্রিয় PHP ফ্রেমওয়ার্কগুলির মধ্যে একটি। Laravel এর সহজতা, শক্তিশালী ফিচার এবং community support সব সময়ই আমাকে মুগ্ধ করেছে।
Laravel এর community এতই শক্তিশালী যে, আপনি প্রায় যেকোনো সমস্যার সমাধান খুব সহজেই পেয়ে যাবেন। এর ecosystem-এ Laravel Nova, Laravel Spark, এবং Laravel Cashier-এর মতো টুলস রয়েছে, যা ডেভেলপারদের কাজ আরও দ্রুত ও সহজভাবে করতে সাহায্য করে। Laravel এর ফিচার সম্পর্কে কোন প্রশ্ন নেই। Laravel এর প্রতি আমার ভালোবাসা একটুও কমেনি। আমি Laravel কে ছেড়ে Django তে চলে আসার পরেও Laravel কে সমানভাবে সম্মান করি এবং প্রয়োজন পড়লে এখনো Laravel দিয়ে কাজ করতেও পছন্দ করি।

কেন আমি Django তে শিফট করলাম:
আমি আমার মাস্টার্স ডিগ্রি কোর্স করার সময় থেকেই Python খুবই intensively ব্যবহার করা শুরু করি, বিশেষ করে মেশিন লার্নিং এবং ডেটা সায়েন্স প্রজেক্টে। Python এর পরিষ্কার কোড স্ট্রাকচার, এবং বিশাল লাইব্রেরির সমৃদ্ধ কালেকশন আমাকে ভীষণভাবে আকৃষ্ট করেছিল।
যেমন: NumPy, Pandas, Scikit-Learn, এবং TensorFlow। এই লাইব্রেরিগুলো ব্যবহার করে মেশিন লার্নিং মডেল তৈরি এবং ডেটা ম্যানিপুলেশন করা অত্যন্ত সহজ। আমার কাছে মনে হয়েছে, Django ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করে ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করা অত্যন্ত সহজ এবং দ্রুত। Django র মডুলার আর্কিটেকচারের কারণে ফিচারগুলোকে সহজেই আলাদা করা যায় এবং মাইক্রো-সার্ভিস আর্কিটেকচার তৈরি করা সহজ হয়। Django “DRY” (Don’t Repeat Yourself) নীতিতে চলে, যার অর্থ হলো একই কোড বা লজিক একাধিকবার না লেখা। এই নীতিটি কোড রিইউজ এবং মেইনটেন করা সহজ করে তোলে, যা বড় প্রজেক্টের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে কোড কমপ্লেক্সিটি কম থাকে এবং ডেভেলপার হিসেবে এটি আমাকে আরও দক্ষভাবে কাজ করতে সাহায্য করে।

Django এর কিছু প্রধান বৈশিষ্ট্য:

  • Django REST Framework (DRF): Django REST Framework (DRF) একটি Django লাইব্রেরি, যা API ডেভেলপমেন্টের জন্য অত্যন্ত শক্তিশালী টুল হিসেবে পরিচিত, যা API ডেভেলপমেন্টকে সহজ এবং দ্রুততর করে। DRF দিয়ে সহজেই RESTful API তৈরি করা যায়, যা অত্যন্ত স্কেলেবল এবং কার্যকরী হয়। এটি authentication, serialization, এবং pagination এর মতো জটিল কাজগুলো সহজভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে, ফলে বড় প্রজেক্টেও API ডেভেলপমেন্টে কোন সমস্যা হয় না। Django REST Framework (DRF) দিয়ে সহজেই হেডলেস API তৈরি করা যায়।

  • Content Management System (CMS) Integration: Django তে Wagtail এবং Django CMS এর মতো শক্তিশালী কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (CMS) আছে, যা কনটেন্ট ম্যানেজমেন্টকে সহজ ও কার্যকরী করে। Wagtail বিশেষত এক্সটেনসিভ কাস্টমাইজেশন অপশন এবং drag-and-drop UI এর কারণে জনপ্রিয়। এটি দিয়ে খুব সহজেই কনটেন্ট-ভিত্তিক ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়, যা Django এর ওপর ভিত্তি করে খুব ভালো পারফর্ম করে। আমার জানা মতে, NASA, The British Museum, এবং Google Arts & Culture Wagtail ব্যবহার করে তাদের কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম পরিচালনা করে।

  • Database support: Django এর সাথে ডিফল্টভাবে SQLite ডাটাবেস সংযোগ থাকে, যা খুব সহজে ব্যবহার করা যায়। এটি ডেভেলপমেন্ট পর্যায়ে দ্রুত কাজ শুরু করার জন্য উপযুক্ত, কারণ আলাদা সেটআপের প্রয়োজন হয় না এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে। Django এর built-in ORM (Object-Relational Mapper) ডাটাবেস ম্যানেজমেন্টকে আরও সহজ করে তোলে এবং complex queries খুব সহজেই লেখা যায়। SQLite এর পাশাপাশি Django প্রায় সব ধরনের SQL ডাটাবেস সাপোর্ট করে, যেমন- PostgreSQL, MySQL, Oracle etc.। Django এর ORM ডাটাবেসের সাথে কাজ করার জন্য একটি অভিন্ন সিনট্যাক্স প্রদান করে, যার মাধ্যমে কোড পরিবর্তন না করেই আলাদা ডাটাবেসে সংযোগ স্থাপন করা যায়।

  • Built in Admin Interface & security: Django এর built-in admin panel মডেলগুলোকে সহজেই ম্যানেজ করার জন্য একটি ড্যাশবোর্ড সরবরাহ করে। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি হয় এবং সহজেই কাস্টমাইজ করা যায়, যার ফলে ডাটাবেসের ডাটা খুব সহজেই ক্রিয়েট, রিড, আপডেট, এবং ডিলিট (CRUD) করা যায়। বড় প্রজেক্টের ক্ষেত্রে এই admin interface ডেভেলপারদের সময় বাঁচায় এবং ডাটাবেস ম্যানেজমেন্টকে করে আরও সহজ। Django অনেকগুলো built-in security ফিচার প্রদান করে, যা SQL Injection, Cross-Site Scripting (XSS), Cross-Site Request Forgery (CSRF) এর মত security issues থেকে সুরক্ষা দেয়।

  • Scalability এবং Performance: Django এর মডুলার আর্কিটেকচার ছোট থেকে বড়, যেকোনো সাইজের প্রজেক্ট স্কেল করতে সক্ষম। এর “shared nothing” ডিজাইন সার্ভারের প্রতিটি অংশকে স্বাধীনভাবে পরিচালিত করতে দেয়, যার ফলে বড় প্রজেক্টেও Django অ্যাপ্লিকেশন দ্রুত এবং সঠিকভাবে কাজ করতে পারে। এছাড়া, Django সহজেই মাইক্রোসার্ভিস আর্কিটেকচারে ইন্টিগ্রেট করা যায়, যা একে আরও বেশি স্কেলেবল করে তোলে।

  • Celery এবং MQ Servers: Django সহজেই Celery এর মতো message queue (MQ) সার্ভারের সাথে ইন্টিগ্রেট করা যায়, যা asynchronous কাজ পরিচালনা করতে সাহায্য করে। ব্যাকগ্রাউন্ড টাস্ক যেমন- ইমেইল সেন্ডিং, ব্যাচ প্রসেসিং, এবং ডেটা এনালাইসিস করার জন্য Celery এবং RabbitMQ ব্যবহার করে Django অ্যাপ্লিকেশনকে আরও কার্যকরী এবং দ্রুত করা যায়।

মূলত Django এর এই বৈশিষ্ট্যগুলো একে একটি FutureProof এবং Scalable ফ্রেমওয়ার্ক হিসেবে তৈরি করেছে। ভবিষ্যতের চাহিদা অনুযায়ী প্রজেক্টকে বাড়ানো বা পরিবর্তন করাও এতে খুব সহজ। Django ব্যবহার করে আমি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, মেশিন লার্নিং মডেল ইন্টিগ্রেশন, এবং Data Analysis সবই করতে পারি, তাও একই ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করে। Django’র জনপ্রিয়তা এবং চাহিদা বিশ্বজুড়ে দ্রুত বাড়ছে। দক্ষ Django ডেভেলপারদের জন্য চাকরির বাজারে প্রচুর সুযোগ রয়েছে, এবং ভালো স্কিল সেট থাকলে তাদের বেতনও অনেক বেশি হতে পারে।

Django এবং Laravel ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে অনেকটা মিল থাকলেও তাদের আর্কিটেকচারে কিছু পার্থক্য রয়েছে। Laravel যেখানে MVC (Model-View-Controller) প্যাটার্ন অনুসরণ করে, সেখানে Django MVT (Model-View-Template) আর্কিটেকচার ব্যবহার করে। Django তে View মূলত ডেটা প্রসেসিংয়ের জন্য এবং Template HTML রেন্ডারিংয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। Laravel থেকে Django তে আসা বা উভয় ফ্রেমওয়ার্কে কাজ করা তুলনামূলকভাবে সহজ, তবে MVT এবং MVC আর্কিটেকচারের পার্থক্য জানা থাকলে কাজ করা আরও সহজ হবে। সময় পেলে এ নিয়ে বিস্তারিত আরেকদিন লিখব ইনশা’আল্লাহ।

বানান ভুল হলে ক্ষমাপ্রার্থী :blush:

18 Likes

আমি গত কয়েকমাস থেকে পাইথন শিখতেছি, আপনার নিয়মিত লেখা পেলে উপকৃত হব ভাই, ধন্যবাদ।

2 Likes

Django শিখতেছি। লিখাটা পড়ে কনফিডেন্স বেড়ে গেলো। ধন্যবাদ ভাই।
২ তো প্রশ্ন ছিল।
১. শুধু MVT প্যাটার্ন দিয়ে প্রোফেশনাল ওয়েবসাইট তৈরি হয়?
(Drf না ইউজ করেই)
২. মিনি টু মিড লেভেল ইকমার্স সাইট MVT দিয়ে বানালে কোন সমস্যা আছে কিনা। (Drf ছাড়া)

1 Like

ইনশা’আল্লাহ আমি ট্রাই করবো। আর আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে আমাকে জিজ্ঞেস করতে পারেন।

১. হ্যাঁ, শুধুমাত্র MVT দিয়ে প্রোফেশনাল ওয়েবসাইট তৈরি করা সম্ভব। যদি API বা মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ইন্টিগ্রেশন না থাকে, তাহলে DRF ছাড়া django MVT যথেষ্ট।

২. না, কোন সমস্যা নেই। MVT দিয়েই মিনি থেকে মিড লেভেল ই-কমার্স সাইট বানানো যায়। তবে বড় স্কেল বা API ইন্টিগ্রেশন প্রয়োজন হলে DRF ব্যবহার করতে পারেন। আর আগে থেকে ভালো প্ল্যানিং করে এগোলে প্রজেক্ট অনেক বেশি রোবাস্ট এবং সুন্দর হয়। আর ভবিষ্যতে যদি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপ করতে চান, তাহলে আপনার এক্সিস্টিং মডেলগুলো খুব সহজেই Django DRF দিয়ে REST API করতে পারবেন। এতে করে আলাদা করে নতুন ব্যাকএন্ড বানানোর ঝামেলা থাকবেনা, এবং একই ডাটাবেস এবং মডেল ব্যবহার করে মোবাইল অ্যাপ, SPA, বা অন্য যেকোনো প্ল্যাটফর্মের সাথে সহজে ইন্টিগ্রেশন করা যাবে।

কোনো প্রশ্ন থাকলে আমাকে জিজ্ঞেস করতে পারেন। ধন্যবাদ।

3 Likes

ধন্যবাদ ভাইয়া। React এবং DRF দিয়ে আশা করছি ভালো কিছুই হবে :grin:

1 Like