UX/UI ডিজাইনের ভবিষ্যৎ: AR আর 3D স্কিল শেখার মাধ্যমে নতুন যুগের জন্য প্রস্তুত হন
যখন আমরা ডিজাইনের ভবিষ্যৎ কল্পনা করি, তখন একটা জিনিস খুব পরিষ্কার – UX/UI ডিজাইনকে সামনে নিয়ে যেতে নতুন টেকনোলজি তৈরি হচ্ছে, বিশেষ করে অগমেন্টেড রিয়েলিটি (AR) এবং AR গ্লাসের মতো ডিভাইস। এই টেকনোলজিগুলি কেবল ডিজিটাল ইন্টারফেসকে স্ক্রিনের গণ্ডি থেকে বের করে নিয়ে আসছে না; বরং নতুন ধরনের ইন্টারঅ্যাকশনের জগৎ খুলে দিচ্ছে। ডিজাইনারদের কাছে নতুন সুযোগও আসছে, যারা ইমারসিভ, 3D স্পেসে কাজ করতে চায়।
AR আর 3D ডিজাইনের প্রয়োজন কেন বাড়ছে?
UX/UI ডিজাইনের অনেকটাই আমরা আজও 2D স্ক্রিনের জন্য করি। যদিও মোবাইল অ্যাপ থেকে ওয়েবসাইট – সবই 2D ইন্টারফেস, কিন্তু AR টেকনোলজির সাথে ডিজাইন করার উপায় পুরোপুরি বদলে যাবে। AR-এর সাহায্যে ডিজাইন করা মানে এমন কিছু তৈরি করা, যা বাস্তব জগতের সাথে মিশে যায়। স্ক্রিনের মধ্যেই আটকে থাকা নয়; AR ডিজাইন বাস্তব জগতের সাথে সরাসরি ইন্টারঅ্যাক্ট করতে সক্ষম।
ভাবুন, আপনি এমন ইন্টারফেস ডিজাইন করছেন যা আপনার চারপাশের বাস্তব জগতের অংশ হয়ে যায়। এর মানে, UX/UI ডিজাইনারদের কাজও বদলাবে, আর এই পরিবর্তনের জন্য 3D ডিজাইন আর স্পেসিয়াল থিঙ্কিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে। 2D থেকে 3D ডিজাইনে যেতে গেলে, আপনাকে এমন অভিজ্ঞতা তৈরি করতে হবে যা গভীরতা, ইন্টারঅ্যাকশন, আর ইমারসন যোগ করতে পারে।
3D স্কিল শেখা এখনই জরুরি কেন?
যদি আপনি ভাবেন যে কেন এখনই 3D শেখা দরকার, তাহলে এখানে কিছু মূল কারণ তুলে ধরা হলো।
ইন্টারঅ্যাকশনের পরিধি বাড়াবে: AR ইন্টারফেস বাস্তবের সাথে মিশে কাজ করে। এ কারণে ডিজাইনারদের এখন বুঝতে হবে, কীভাবে ব্যবহারকারীরা এই ফিজিক্যাল স্পেসের মধ্যে চলাফেরা করেন বা বিভিন্ন জিনিসের সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করেন। এটা সাধারণ 2D ইন্টারফেস ডিজাইন থেকে অনেকটাই আলাদা, কারণ এতে মানুষের রিয়েল ওয়ার্ল্ড এক্সপেরিয়েন্সকে হিসেব করতে হয়। ফলে ডিজাইনারদের স্পেসিয়াল থিঙ্কিং, বা কল্পনার শক্তি বাড়াতে হবে, যাতে ব্যবহারকারীরা আরো স্বাভাবিকভাবে ডিজাইন ব্যবহার করতে পারেন।
প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকবেন: যারা এখনই 3D ডিজাইন সফটওয়্যার, যেমন ব্লেন্ডার, স্প্লাইন, বা Cinema 4D-তে দক্ষ হবেন, তারা ভবিষ্যতের ডিজাইন ইন্ডাস্ট্রিতে এগিয়ে থাকবেন। AR বা 3D ডিজাইন করতে পারা মানে আপনি অনেকটাই আধুনিক প্রয়োজনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম। শুধু সেটা নয়, 3D স্কিল থাকলে একধরনের ক্রিয়েটিভ স্পেসে কাজ করা যায়, যা কেবল 2D স্ক্রিনে ডিজাইন করা থেকে অনেকটাই আলাদা।
ক্যারিয়ার ফিউচার-প্রুফ করুন: AR ও 3D শুধুমাত্র ট্রেন্ড না; বরং ডিজাইন ও প্রযুক্তির এক নতুন অধ্যায়। প্রতিনিয়ত AR আরও উন্নত হচ্ছে, আর এই টেকনোলজি যখন পরিপূর্ণ হবে, তখন ডিজাইনারদের এই নতুন ডিজাইন ভাষায় দক্ষ হওয়া লাগবে। যারা এখনই 3D আর স্পেসিয়াল থিঙ্কিংয়ে দক্ষ হবেন, তাদের চাহিদা ভবিষ্যতে অনেক বেশি হবে। কারণ কোম্পানিগুলো এমন ডিজাইনার চাইবে যারা বাস্তব আর ডিজিটাল জগতকে একসাথে মিশিয়ে এমন এক অভিজ্ঞতা দিতে পারবে যা আগে কেউ কল্পনাও করেনি।
AR ও 3D ডিজাইন শেখা শুরু করবেন কীভাবে?
প্রথমেই, 3D ডিজাইন সফটওয়্যারগুলির সাথে পরিচিত হন। Blender, Spline, অথবা Cinema 4D-এর মতো টুলগুলোর মাধ্যমে সহজেই 3D মডেলিং শুরু করা যায়। ইউটিউব বা বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে 3D ডিজাইন শেখার প্রচুর টিউটোরিয়াল আছে, যা আপনার জন্য সহায়ক হবে। এরপর AR প্ল্যাটফর্মে কাজ শুরু করতে পারেন, যেমন Spark AR বা Unity-এর মতো টুল ব্যবহার করে AR ইন্টারফেস তৈরি করতে পারেন।
ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নিন
আপনি যদি UX/UI ডিজাইনের সাথে যুক্ত থাকেন, তবে এটাই সময় 3D এবং AR ডিজাইন শেখার। ডিজাইনের ভবিষ্যৎ ইমারসিভ, আর যারা নতুনভাবে চিন্তা করতে ও নতুন স্কিল অর্জন করতে আগ্রহী, তাদের জন্য এখানে প্রচুর সম্ভাবনা। AR ও 3D ডিজাইনের যুগে ডিজাইন কেবল স্ক্রিনে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং ব্যবহারকারীর বাস্তব জগতের অংশ হয়ে উঠবে।
অতএব, নতুন স্কিল শিখতে শুরু করুন, ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হন, আর নিজেকে এমন একজন ডিজাইনার হিসেবে গড়ে তুলুন যে নতুন যুগের ডিজাইন ভাষা বুঝতে সক্ষম!