স্বাধীন বাংলাদেশে নিজের ডিজিটাল লাইফ স্বাধীন করতে পেরেছেন তো? [পর্ব-১]

প্রথমেই শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি চব্বিশের হাজারও বীর শহিদদের যাদের রক্তের উপর বাংলাদেশ ২.০ দাঁড়িয়ে আছে। সেই সাথে স্মরণ করছি অগণিত আহত গাজীদের যারা আপনার-আমার স্বাধীনতার জন্য আজীবনের পঙ্গুত্ব এবং বেদনা বরণ করে নিয়েছেন। তাদের এই ঋণ শোধ করি কি করে!

For to be free is not merely to cast off one’s chains, but to live in a way that respects and enhances the freedom of others.
- Nelson Mandela

পরাধীনতা কার ভালো লাগে বলুন! ফিজিক্যাল লাইফে তো আমরা স্বাধীন হলাম, কিন্তু আমাদের ডিজিটাল লাইফের কি খবর? কখনও কি ভেবে দেখেছেন টেক দুনিয়ার টেক জায়ান্টদের কাছে আপনি-আমি-আমরা সবাই পরাধীন হয়ে রয়েছি। মোবাইল বা কম্পিউটার অন করা থেকে শুরু করে অফ করা পর্যন্ত আমাদের ডিজিটাল লাইফের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে। আমরা কি করি, কোথায় যাই, কাদের সাথে মিশি, কি খাই, কি পরি, কি ভালো লাগে, কি ভালো লাগে না এসব তারা আমাদের চাইতে ভালো জানে। আর আমাদের এই একান্ত নিজস্ব তথ্য বিক্রি করে তারা আবার মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের সাম্রাজ্য তৈরি করে ফেলেছে। এখনও কি সময় হয়নি এই স্বৈরাচারী মিলিয়ন ডলার টেক জায়ান্টদের ছুঁড়ে ফেলার? একবারও কি মনে হয়নি আর না, আমাদেরকে এই তথ্যখেকো ফ্যাসিস্ট টেক জায়ান্টদের হটিয়ে ডিজিটাল লাইফ স্বাধীন করতে হবে?

image

যদি মনে হয় তাহলে আপনি একজন স্বাধীনচেতা মানুষ। আপনাকে এই যুদ্ধে স্বাগতম। আপনার স্বাধীনতার এই যুদ্ধে আপনি কিছু সহযোদ্ধা পেয়ে যাবেন যারা আপনার স্বাধীনতাকে প্রতিষ্ঠা করতে অনেক আগে থেকেই কাজ করে যাচ্ছে, আপনার অজান্তেই। তাদের সাথে পরিচয় হওয়া জরুরী। দলবদ্ধ হলেই না কোন আন্দোলন শক্তিশালী হয়। চলুন একসাথে উন্মোচিত করি ডিজিটাল দুনিয়ার সব স্বৈরাচার এবং জালিমদের মুখ ও মুখোশ।

Windows

আপনার টেক জীবনে বা সামগ্রিক ভাবেও যদি ধরেন, বর্তমানে আপনার জীবনের সবচাইতে বেশি ব্যবহৃত জিনিসগুলোর একটা তালিকা করলে আপনার কম্পিউটার তার মধ্যে থাকার কথা। আর আপনার কম্পিউটার চালাতে যে জিনিসটা আপনার লাগবেই তা হলো OS বা Operating System এবং প্রায় নিশ্চিতভাবেই বলা যায় আপনি Windows ব্যাবহার করছেন এবং তাও আবার Pirated.

তাহলে কি দাঁড়াচ্ছে বিষয়টা?

Windows ফ্যাসিস্টের মতো একের পর এক সিদ্ধান্ত আপনার উপর চাপিয়ে দিচ্ছে এবং আপনার সম্মতি ছাড়াই আপনার ব্যাপারে বিভিন্ন তথ্য সার্বক্ষণিক হাতিয়ে নিচ্ছে। তারউপর টাকা দিয়ে উইন্ডোজ কিনবেন না বিধায় পাইরেটেড ভার্সন চালিয়ে নিজের ডিজিটাল লাইফ চোর-ডাকাতদের (হ্যাকার-স্প্যামারদের) হাতে তুলে দিচ্ছেন।

অথচ আপনার কাছে সবচাইতে উত্তম এবং সহজ সলিউশন আগে থেকেই বিদ্যমান। Linux.

সিকিউরিটি কিংবা প্রাইভেসি, সবকিছুতেই লিনাক্স উইন্ডোজের চাইতে সুপারিওর। তার চাইতে বড় কথা আপনাকে এর পিছনে এক পয়সাও খরচ করতে হবে না।

আগে লিনাক্সের কথা শুনলে মানুষ ভয় পেত এবং এর যথাযথ কারণও ছিল। টার্মিনাল ব্যবহার করা এবং বিভিন্ন কাজের সফটওয়্যার না পাওয়া লিনাক্স ব্যবহারে প্রধান প্রতিবন্ধক ছিলো। কিন্তু বর্তমানে লিনাক্সের বেশ কিছু ডিস্ট্রিবিউশন যেমনঃ Parrot OS (Home Edition), Linux Mint, Zorin OS, Ubuntu ইত্যাদি উইন্ডোজের চাইতে অধিক ইউজার ফ্রেন্ডলি হয়ে গিয়েছে। টার্মিনালে এখন আপনার যাওয়ার কোনও প্রয়োজনই নেই। আর তাদের নিজস্ব সফটওয়্যার সেন্টারে রয়েছে অজস্র ফ্রি এবং ওপেন সোর্স সফটওয়্যার। Microsoft Office এর বিকল্প হিসেবে Libre Office দেয়া থাকে বাই ডিফল্ট। এখানেও নো মানি, নো হ্যাসল।

যেহেতু এই স্বাধীনতা অর্জনে কোন রক্ত কিংবা টাকা কোনটাই লাগছে না, সুতরাং একবার ট্রাই করা যেতেই পারে। কি বলেন আপনারা?

Free yourself. Join the free software movement.

[পরের পর্বে থাকছে স্বৈরাচার গুগলের বিরুদ্ধে ফাইট করার রণকৌশল]

8 Likes